৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র আপডেট ? সঞ্চয়পত্রে লাভ কত ? টিন ছাড়া সঞ্চয়পত্র কেনা যায় কি ?

 

৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র আপডেট ও সঞ্চয়পত্র কেনার সহজ নিয়ম, সঞ্চয়পত্রের দাম ১ লক্ষ, ২ লক্ষ, ৫ লক্ষ ও ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত । এটি ক্রয় করা যায় সঞ্চয় ব্যুরো, বাংলাদেশের সকল তফসিল ব্যাংক হতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা হতে এছাড়া জিপিও ডাকঘর থেকে ।

 

সঞ্চয়পত্রের ক্রয় পদ্ধতি সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র সরাসরি নগদ অর্থ প্রদানের মাধ্যমে কিনতে পারবেন । তবে এক লাখ টাকার উপরে যদি আপনি সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ করতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে এমআইসি যুক্ত ব্যাংক চেক দিয়ে ক্রয় করতে হবে । ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র যৌথ নামে কেনা যায় ।

 

মেয়াদ : এই সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ ৩ বছর । চাইলে মেয়াদ শেষ হোওয়ার আগে টাকা তোলা যায় , তবে তা নিয়ম মেনে ।

 

সঞ্চয়পত্রের উৎসকর : এখানে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ৫% ও ৫ লাখ টাকার ওপর কিনলে উৎসকর ১০% ।

 

লাভের পরিমাণ বা মুনাফার পরিমাণ

মুনাফার হার মেয়াদ শেষে ১১.০৪%। বছর ভিত্তিক মুনাফার হার যথাক্রমে ১ম বছরে ১০.০০%, ২য় বছরে ১০.৫০%, ৩য় বছরে ১১.০৪% হারে মুনাফা এটি পাবে মেয়াদ শেষ হোওয়ার আগে ভাঙ্গলে । ৩ মাস পরপর মুনাফা পাওয়া যায়। মোট ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র থাকলে প্রতি ৩ মাসে ১ লক্ষ টাকায় ২৬২২ টাকা আর ৫ লক্ষের উপরে থাকলে ২৪৮৪ টাকা পাওয়া যায়, ট্যাক্স কাটার পরে।

 

কারা কিনতে পারবে : 

– বাংলাদেশের সকল শ্রেণী পেশার প্রাপ্ত বয়স্ক ১৮ বছর বা এর বেশি বয়সের মানুষ কিনতে পারবেন, একজন সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে সবাই ।

 

সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ সীমা :
 
– নতুন নিয়মে একজন সাধারণ গ্রাহক একক নামে (পরিবার সঞ্চয়পত্র, ৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র) সর্বোচ্চ ৫০ লাখ এবং যৌথ নামে ১ কোটি টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন না। আর ক্রেতা পেনশনার হলে একক নামে (পরিবার সঞ্চয়পত্র, ৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও বাংলাদেশ
সঞ্চয়পত্র) ১ কোটি এবং যৌথ নামে দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত কিনতে পারবেন।

উদাহরণ সরুপ যে পরিমাণ টাকায় ৩ মাস পর পর যে মুনাফা পাওয়া যাবে তা নিচে দেখুন :

বিনিয়োগকৃত টাকার পরিমাণ প্রতি ১ (এক) লক্ষ টাকায় ৩-মাস অন্তর, মুনাফার পরিমাণ (টাকায়)

১,০০,০০০/= ২,৭৬০.০০
২,০০,০০০/= ৫,৫২০.০০
৫,০০,০০০/= ১৩,৮০০.০০
১০,০০,০০০/= ২৭,৬০০.০০

 

বছর শেষে প্রতি লাখ টাকায় মুনাফার পরিমাণ :

মুনাফার হার প্রতি ১ (এক) লক্ষ টাকায় মূলসহ মুনাফার পরিমাণ
১ম বছরান্তে ১০.০০% ১,১০,০০০.০০
২য় বছরান্তে ১০.৫০% ১,২১,০০০.০০
৩য় বছরান্তে ১১.০৪% ১,৩৩,১২০.০০

 

 

সুবিধা : 

– অটোমেশনের নতুন নিয়মে নমিনী চেন্জ করা যায় না।
– ক্রেতা মারা গেলে নমিনী চাইলে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বা পরে টাকা তুলতে পারবেন ।
– চুরি হলে/হারিয়ে গেলে/ধ্বংস হলে/ নষ্ট হলে ডুপ্লিকেট/নকল সঞ্চয়পত্র ইস্যু করা যাবে অনলাইনে।
-সঞ্চয়পত্র এক স্থান হতে অন্য স্থানে স্থানান্তর করা যায়, ব্যাংক হতে ব্যাংকে, জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো থেকে জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরোতে ও ডাকঘর থেকে ডাকঘরে ।
– ক্রেতা বা নমিনী চাইলে মেয়াদ শেষ হোওয়ার আগে এটি ভাঙ্গাতে পারবেন, তবে মেয়াদ শেষ হোওয়ার আগে ভাঙ্গালে মুনাফার পরিমাণ কম পাবে ।

 

 

সঞ্চয়পত্র কেনার পেপার :

– ক্রেতার ও নমিনীর ২ কপি ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র প্রয়োজন । জন্ম নিবন্ধন সনদ অথবা পাসপোর্ট দিয়ে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা যায় না ।

 

 

সঞ্চয়পত্র করার ও ভাঙানোর নিয়ম : 

যেই ব্যাংক বা সঞ্চয় ব্যুরো থেকে কিংবা ডাকঘর থেকে সঞ্চয় পত্র কিনেছেন সেখান থেকে সঞ্চয়পত্র নগদায়ন বা ভাঙাতে করতে পারবেন ।

 

সঞ্চয়পত্রের মুনাফা তোলার নিয়ম : 

নতুন নিয়মে, যেই অ্যাকাউন্টের চেক দিয়ে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা হয় মুনাফার টাকা ঐ ব্যাংক একাউন্টে চলে যাবে । চাইলে ব্যাংক একাউন্ট বদলানো যাবে, মুনাফার টাকা তোলার ক্ষেত্রে ।

১ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করলে ক্রেতাকে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) দিতে হচ্ছে। এছাড়া সব ধরনের লেনদেন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য সঞ্চয়পত্র ফর্ম, নিজের এবং নমিনির ছবি এবং NID এবং TIN Certificate লাগে, তবে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত TIN লাগে না। সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের নতুন ফর্ম ডাউনলোড করতে পারবেন 

 

 

TIN এবং আয়কর রিটার্ন

TIN এখন eTIN যেটা ১২ সংখ্যার এবং এই ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে হয় 
নতুন নিয়ম অনুযায়ী TIN যাদের আছে তাদের সবার রিটার্ন জমা দিতে হবে। যারা TIN নিয়েছে শুধুমাত্র Credit কার্ড নিতে বা জমি বিক্রি করতে কিন্তু করযোগ্য আয় নাই, তাদের রিটার্ন না দিলেও হবে। এ বছর কর দিতে হবে – পুরুষঃ ৩ লক্ষ, মহিলা এবং ৬৫+ বয়সের যে কেউঃ ৩ লক্ষ ৫০ হাজার, প্রতিবন্ধীঃ ৪ লক্ষ ৫০ হাজার এবং মুক্তিযদ্ধাঃ ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার বেশি ইনকাম করলে ।

 

ট্যাক্স রিটার্ন ফর্ম ডাউনলোড করতে হবে 

রিটার্ন ফর্ম পূরণ করার নির্দেশিকা ডাউনলোড করতে হবে

পূরণ করা ফর্ম জমা দিতে হবে যার যার কর সার্কেল অফিসে, যার ঠিকানা TIN-এর কাগজে লেখা আছে। রিটার্ন নিজেই জমা দেয়া যায় এবং এতে কোন টাকা লাগেনা।

error: Content is protected !!